ঢাকা'র IQA স্কোর ২২০

 


ঢাকার বায়ুর মান নিয়ে উদ্বেগ: IQA স্কোর অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ

আজ শুক্রবার (১৫ নভেম্বর), সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার বায়ুর মান আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএ (IQA) এর তথ্য অনুযায়ী ২২০ স্কোরে পৌঁছেছে। এটি শহরটির বাতাসকে “অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর” পর্যায়ে রেখেছে। এই স্কোর ঢাকাকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানে নিয়ে গেছে।  

গতকাল ঢাকার অবস্থান ছিল ৯ম স্থানে, স্কোর ১২১। একদিনের ব্যবধানে স্কোরের এই ভয়াবহ বৃদ্ধি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় হুমকি।  

IQA কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে?

IQA (Air Quality Index) হলো বাতাসের মান নির্ধারণে একটি বৈশ্বিক সূচক। এটি বায়ুতে থাকা দূষিত উপাদান যেমন পিএম ২.৫, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড ইত্যাদির মাত্রা মাপার মাধ্যমে স্কোর প্রদান করে।  

– ০-৫০: বাতাস ভালো।  

– ৫১-১০০: সহনীয়।  

– ১০১-১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ক্ষতিকর।  

– ১৫১-২০০: সার্বিকভাবে অস্বাস্থ্যকর।  

– ২০১-৩০০: অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর।  

– ৩০১-এর বেশি: দুর্যোগপূর্ণ।  

ঢাকার বর্তমান স্কোর ২২০, যা IQA সূচকে অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে।  

বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ঢাকা

আজকের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৩য়। প্রথম স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ৭৩২। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, যার স্কোর ৬৭০।  

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার এই অবস্থান বায়ুদূষণের ক্রমবর্ধমান সংকটকে নির্দেশ করে।  

IQA স্কোর অনুযায়ী বায়ুদূষণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি

ঢাকার IQA স্কোর ২২০ সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি।  

  1. ফুসফুসের সমস্যা: বায়ুদূষণ হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।  
  2. হার্টের সমস্যা: উচ্চ মাত্রার বায়ুদূষণ হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।  
  3. শিশু ও বয়স্কদের জন্য বিশেষ ঝুঁকি: শিশু ও প্রবীণ ব্যক্তিরা এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, প্রতি বছর বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

IQA রিপোর্ট অনুযায়ী ঢাকার জন্য পরামর্শ

আইকিউএ (IQA) হতে বায়ুদূষণ থেকে সুরক্ষার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:  

– বাইরে মাস্ক পরুন: ঘরের বাইরে বের হলে ভালোমানের মাস্ক ব্যবহার করুন।  

– জানালা বন্ধ রাখুন: দূষিত বাতাস ঘরে প্রবেশ বন্ধ করতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।  

– বাইরের ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন: এই সময় খোলা জায়গায় শারীরিক কার্যক্রম না করাই ভালো। চেষ্টা করুন ইনডোর এক্সারসাইজ করতে।

– এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন: ঘরের ভেতর বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে এই ডিভাইস ব্যবহার করুন।  

ঢাকার বায়ুদূষণের কারণ এবং সমাধান

পরিবেশবিদরা মনে করেন, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হলো:  

  1. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার: কারখানা ও যানবাহনে অতিরিক্ত তেল, গ্যাস এবং কয়লার ব্যবহার।  
  2. ধূলিকণা এবং নির্মাণকাজ: নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধূলিকণা বায়ুদূষণ বাড়িয়ে দেয়।  
  3. পর্যাপ্ত সবুজায়নের অভাব। 

সমাধান:

– কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।  

– পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।  

– নির্মাণকাজের ধুলাবালি ছড়ানো নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।  

– বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাড়াতে হবে।  

https://www.shottokontho.com

https://shottokontho.com/%e0%a6%a2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-iqa-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%b0-%e0%a7%a8%e0%a7%a8%e0%a7%a6/

মন্তব্যসমূহ